আজকের দিনে মোবাইল ফোন চিনে না বা দেখেনি - এমন কাউকে বোধ হয় পাওয়া যাবে না। আমাদের গুরুজনদের কারো কারো মোবাইল ফোন আছে। কিন্তু যাদের নেই তাদের অনেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে জানে-- কেউ একটু বেশি, কেউ একটু কম । মোবাইল ফোন দিয়ে যে কতো কিছু করা যায় তার সবটা অবশ্য সবাই জানে না । তবে যারা একটু কম জানে তারাও প্রয়োজন মতো তাদের কাজটুকু মোবাইল ফোনে সেরে নিতে পারে । এখন এমন মোবাইল ফোনও আছে যাতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে, ছবি তোলা যায়, সিনেমা দেখা যায় । এসব মোবাইলে আমরা বই পড়তে পারি, গান শুনতে পারি, এস এম এস পাঠাতে পারি । এমনকি টাকাও পাঠাতে পারি । তুমি তোমার বাসায় বসে মোবাইলে ছবি তুলে সেই ছবি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পাঠাতে পার ।
কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে, মোবাইল ফোন আবিষ্কার হলো কেমন করে, অথবা এটা কেমন করে কাজ করে । আসলে মোবাইল ফোন কেউ একজন আবিষ্কার করেননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই এটার উদ্ভাবন কাজ শুরু হয় । তারপর কালে-কালে একটু একটু করে আজকের মোবাইল ফোন বেরিয়েছে প্রতি বছরই এর পরিবর্তন ও উন্নয়ন ঘটছে ।
আমেরকিার বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেন । ১৮৭৬ সালের ১০ই মার্চ তিনি তাঁর সহকারী টমাস অগাস্টাস ওয়াটসনের সাথে প্রথমবারের মতো সফল টেলিফোন কল করেন ।
প্রথম পর্যায়ে সীমিত আকারে মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু হয় সেন্ট লুই শহরে ১৯৪৭ সালে । ধাপে ধাপে এর উন্নতি ঘটে । ১৯৬৪ সালের দিকে শুধু গাড়িতে মোবাইল ফোন থাকত । তার ওজন ছিল প্রায় এক কেজি ।
১৯৭১ সালে ফিনল্যান্ডে সকল মানুষের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু হয় । ১৯৭২ সালে গবেষক মার্টিন কুপার হাতেধরা ছোট সেট তৈরি করেন ।
পাশের ঘরে ফোন করা থেকে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই এখন ফোন দিয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে । কিন্তু ব্যাপারটি কীভাবে ঘটে ।
যে এলাকা জুড়ে মোবাইল ফোন কাজ করবে তার সবটাকে কতগুলো অংশে ভাগ করা হয় । প্রত্যেক অংশে শক্তিশালী বেতার টাওয়ার ( মাস্তুল) বসানো হয় । এই টাওয়ারগুলো একটি অন্যটির সাথে যোগাযোগের একটা অদৃশ্য জাল ( নেটওয়ার্ক ) তৈরি করে । মোবাইল সেটের মাধ্যে থাকে একটা ‘অ্যানটেনা’ । সারাক্ষণ তরঙ্গের মাধ্যমে সেটি টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ রাখে । মনে কর কোনো সেট থেকে বোতাম চেপে অন্য কোনো নম্বরে যোগাযোগ করা হলো। তখন সবচেয়ে কাছের টাওয়ারের মাধ্যমে অন্য প্রান্তের মোবাইল সেটটি খুঁজে নেয় । একটাতে না পেলে রিলেরেসের মতো সেটি পরপর যতগুলো টাওয়ার দরকার সব পার হয় । মুহূর্তের মধ্যে পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট নম্বরটিতে । হ্যালো বলার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎগতিতে তা তরঙ্গে পরিনত হয় । নেটওয়ার্কের মাধ্রমে চলে যায় অন্য প্রান্তে । আবার গ্রাহকের ফোনসেট ্েতার তরঙ্গকে কথায় বা আওয়াজে বূপান্তারিত করে । অনেকগুলো জায়গায় বসানো নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে সমন্বয় করে মোবাইল ফোনের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ।
No comments:
Post a Comment